কক্সবাজার শহরের প্রধান গণপরিবহন টমটম ভাড়া নির্ধারণ করা খুবই জরুরী



কক্সবাজারে গণ পরিবহণের ভাড়া নির্ধারণের যেন কেউ নেই। যে যার ইচ্ছামত ভাড়া আদায় করছে। এতে নিষ্পেষিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে রিক্সা, টমটমসহ শহরতলীর গণপরিবহনের ভাড়া নিয়ে দিন দিন বেড়েই চলছে টমটম চালকদের নৈরাজ্য। যেখানে পার্কিং, ওভার টেকিং, যাত্রীদের সাথে অসদাচরণ, তুচ্ছ অজুহাতে অতিরিক্ত ভাড়া সহ ননা অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কথা বলার কোন চান্জ নেই যা মন চায় তা বলছে চালকরা। সামান্যতম জায়গায় টমটম চালকরা ১৫/২০ টাকা ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীদের একরকম শোষণ করছে বলে মত প্রকাশ করেন অনেকে। এছাড়া অবৈধ টমটমের অভিযোগ-তো আছেই।
অথছ এ বিষয়ে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া কিছুদিন আগেও কক্সবাজারে গণপরিবহনের ভাড়া নিয়ে একটি সন্তুষজনক অবস্থা ছিল। কিন্তু এখন কেউ যেন কারো কথা শুনে না। আগে শহরের অলি গলিতে রিক্সা ভাড়া টাঙ্গানো ছিল, সে অনুযায়ী মানুষ ভাড়া দিত। হয়তো সামান্য কিছু পার্থক্য হতো। কিন্তু এখন সেটা নেই। তাই রিক্সা ও টমটম চালকরা ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করছে। এ নিয়ে প্রায়শই চালকদের সাথে যাত্রীদের কথা কাটাকাটিসহ হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। শুধু অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নয়, তুচ্ছ যে কোন বিষয় নিয়েই টমটম চালকরা যাত্রীদের উপর চড়াও হয়। জানা যায়, টমটম চালকরা দাবী করেন তাদের গাড়ীতে ৫ টাকার কোন ভাড়া নেই উটানামা ১০ টাকার ভাড়া আছে। চালকরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত করেন পরে তারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে।
চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে ৫ টাকার ভাড়া নিচ্ছেন ১০ টাকা আবার কারো থেকে ২০ টাকা আবার রাত ১০টা বাজার সাথে সাথে নতুন আর এক নিয়ম চালকদের ৫ টাকার ভাড়া ১০ টাকা আবার ১০ টাকার ভাড়া যেখানে সেখানে ৩০ টাকা। চালকদের এই কথা জিঙ্গেস করলে তারা বলে পৌরসভার হুকুম। পর্যটকদের কাছে মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া আদায়, স্থানীয়দের রিজার্ভ ভাড়ার চাইতে বেশি ভাড়া দাবি-এসব সমস্যা দীর্ঘদিনের হলেও সমাধানে কার্যত কাউকে এগিয়ে আসতে আজ পর্যন্ত দেখা যায়নি। কক্সবাজার শহরের টমটমগুলো রাস্তায় চলছে পৌরসভার অনুমতি কাগজ নিয়ে। সেই হিসেবে এই সমস্যা সমাধানের কথা পৌরসভার কর্মকর্তাদেরই। তাদের এ বিষয়ে কোনো কর্মকাণ্ড চোখে পড়েনি কখনো।

এখন দেখি স্থানীয় বা পর্যটক কেউ যদি দুরপাল্লার বাস থেকে সকালে নামে তাদের টানা হেচড়া করা হয়, কারো ব্যাগ নিয়ে যায় এক গাড়ীতে, আর ছেলে মেয়ে নিয়ে যায় আরেক গাড়ীতে। টমটম ও সিএনজি চালকরা পর্যটকদের তাদের পছন্দের হোটেলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এর জন্য হোটেল থেকে কমিশন আদায় করে। যাত্রী ঢাকা থেকে আগে হোটেল ভাড়া করলেও টমটম চালক তাকে নানাভাবে টমটমে ওঠার পর ফুঁসলিয়ে অন্য দিকে নিয়ে যায়। অনেক টমটম চালক সুযোগ বুঝে পর্যটককে বিপাকে ফেলারও চেষ্টা করে। কক্সবাজার জেলা শহরজুড়ে হোটেল দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য বাড়ছে।
টমটমওয়ালাদের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ আরো গুরুতর। একে তো রিজার্ভ ভাড়া ছাড়া টমটম পাওয়া যায় না। রিজার্ভ যেতে চাইলও স্থানীয়দের কাছে ভাড়া কম পাওয়া যাবে সেজন্য টমটমওয়ালারা তাদেরকে নিতে চায় না-এমন অভিযোগ হাজারো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পর্যটকদের আনাগুনা বুঝে এমনটি করে থাকেন শহরের টমটম চালকরা। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও যেতে না পেরে শেষ পর্যন্ত পায়ে হেটে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অনেকেই ।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বিদ্যুত চালিত অটো রিক্সা পাল ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে বিতারিত হয়ে ধেয়ে এসেছে কক্সবাজারের প্রতিটি উপজেলার আনাছে কানাছে। কেননা চট্টগ্রাম শহরের বিদ্যুতের অপচয় ও যানযট ‍নিরসনে এইসব যানবাহন নিষিদ্ধ করেছিল প্রশাসন। এরপর থেকে চট্টগ্রাম শহরের অটো রিক্সাগুলো ঝাকে ঝাকে ধেয়ে এসেছিল গ্রাম থেকে গ্রামে। এই বিদ্যুত চালিত টমটম ও রিক্সার কারণে ভয়াবহ বিদ্যুতের লোডশেটিং হচ্ছে কক্সবাজারের প্রতিটি উপজেলায়। ফলে দুর্ভাগ পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার সাধারণ গ্রাহকের। বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষর্থীদের লেখাপড়া।